মতামত
এস এম তারেকঃ
১৯৪৮ সালের ৪ঠা জানুয়ারী জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হাত ধরে জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। জন্মলগ্ন থেকে মানবতার কল্যাণে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর সমস্ত ন্যায্য আন্দোলনে এবং দেশ ও জাতীর স্বার্থে কাজ করছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠনটি। বিগত দিনগুলোতে ছাত্রলীগ পেয়েছে কোটি মানুষের হৃদয়ের গভিরতল থেকে ভালবাসা এবং সম্মান।
গত রবিবার (৭ ই মার্চ) মেহেরপুরের গাংনী শহরের শহীদ রেজাউল চত্বর সংলগ্ন লেপ-তোষকের দোকানে এবং একটি তুলা কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে দশ-বারোটি দোকান ও দুটি বাসা-বাড়িতে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে আগুন। প্রায় আধাঘন্টা ধরে আপনমনে নিয়ন্ত্রনহীনভাবে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশে পাশে। তখনও ফায়ার সার্ভিস উপস্থিত হয়নি। গাংনী পৌরসভার ৪ টি ট্যাংকে পানি বোঝাই একটি গাড়ি এসে আগুন নেভানোর ব্যার্থ চেষ্টা করে। তখনই দৃষ্টিগোচর হয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের প্রশংসনীয় ভূমিকা। মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগ, গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগ ও গাংনী পৌরছাত্রলীগ একত্রিতভাবে আশপাশের দোকনের মালামালগুলো যাতে আগুনে না পুড়ে যায় সেজন্য মালামালগুলো নিরাপদ স্থানে মাথায়, কাধে, বুকে চেপে ধরে নিয়ে যায়। আগুন যখন বৃহৎ আকার ধারণ করার পথে ঠিক সেই সময় উপস্থিত হয় ফায়ার সার্ভিস বামন্দী ইউনিট। ফায়ার সর্ভিসের পানি বোঝায় পাইপ কাধে নিয়ে দাড়িয়ে থাকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুন্তাসির জামান মৃদুল ও গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টু অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আগুন নেভানোর কাজে ঝাপিয়ে পড়ে। বামন্দী ফায়ার সার্ভিস টিম আগুন নেভাতে হিমশিম খেয়ে উঠতেই সেখানে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসের আরেকটি ইউনিট উপস্থিত হয়। যে তুলা কারখানায় আগুনের উৎপত্তি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গাংনী উপজেলা ছারত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল অনিক, গাংনী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুল ইসলাম মহনসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা ও কর্মীকে নিয়ে প্রচন্ড ধোয়া ও আগুনের তাপের মাঝে ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ কাধে নিয়ে কারখানার মধ্যে ঢুকে পড়ে। জীবনের ঝুকি নিয়ে কারখানার চালে জ্বলতে থাকা ঢেউটিন খুলতে থাকে তারা। প্রচন্ড ধোয়া, আগুনের তাপ আর পাইপের বোঝা কাধে নিয়ে এ পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে আসিফ ইকবাল অনিক। তবুও ছাত্রলীগের জন্মগত দ্বায়িত্ববোধের কারণে কাজ ফেলে যাননি তারা। আগুনে পুড়ে, ঢেউটিনে কেটে ক্ষতবিক্ষত হয় অনিক, মহনসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা।
গাংনীর অগ্নিকান্ডস্থলে জীবনের ঝুকি নিয়ে যেভাবে কাজ করেছে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা এখান থেকেই বারবার প্রমাণ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যই নয়, সারা বাংলার র্স্বস্তরের মানুষের জন্য দেশ ও জাতীর স্বার্থে জীবন দিতেও প্রস্তুত।